শুক্রবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৪

সিএসই এবং এদেশের প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি

সিএসই হল ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরের সবচেয়ে ক্রিয়েটিভ সাবজেক্ট। ক্রিয়েটিভিটির
সাগর বলা যায় যাকে! তুমি বিশ্বাস কর আর নাই কর সিএসই পড়ার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় ২০%
ফ্যাক্টর, ৩০% ফ্যাক্টর হল তুমি ম্যাথ ও লজিক কেমন পারো আর বাকি ৫০% ফ্যাক্টর হল তুমি নিজে কেমন ক্রিয়েটিভ। এটা কোন মুখস্তবিদ্দ্যার বিষয় না । তোমার যদি চিন্তা শক্তি, কল্পনা করার ক্ষমতা, কঠোর পরিশ্রম করার মনোবাসনা , লেগে থাকার তীব্রইচ্ছা, কম্পিউটারের সামনে বোর
না হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকার ধৈর্য শক্তি, নতুন কিছু বানানোর স্বপ্ন থাকে, তাহলে
৫০% কাজ হয়েই গেছেঅর্থাৎতুমি নিঃসন্দেহে যথেষ্ট ক্রিয়েটিভ মানুষ। তুমি বস
নির্দ্বিধায় সিএসই তে আসতে পারো, ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম । এই বৈশিষ্ট্য গুলি না থাকলে
আল্লাহর দোহাই লাগে জোরকরে সিএসই পড়তে চলে আসা উচিত না। (আমার ব্যক্তিগত মতামত,
মানতে না চাইলে না মানবা,
পড়ে নিজেই বুঝবা জেনেশুনে
করেছো বিষ পান)
সিএসই এর অলিতে গলিতে ম্যাথ খুবই কাজে লাগে। যদি ম্যাথ এ খুব বেশি কাঁচা হও, তাহলে সিএসই তে হাজারটা সমস্যায় পরবা। একজন কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার যা কিছু করে বা বানায় সবকিছুই গনিতের তেলেসমাতি। গণিত এবং যুক্তি কে কাজে লাগিয়ে জাদু দেখানোই আমাদের কাজ
আর সিএসই তে যা কিছুই পড়ানো হয় সব কিছুই গনিতের বিভিন্ন চমৎকার ব্যাবহার এর সাথে
সম্পর্কিত । কাজেই গনিতকে ভালো না বেসে সিএসই তে উন্নতি করা সম্ভব না। কাজেই যারা ক্রিয়েটিভ এবং গণিতকে ভালোবাসো, তারা
একটু নড়ে চড়ে বসো! তোমাদের কেই খুজতেসে
সিএসই !!!! এমনিতেও বাংলাদেশে
ভালো সিএসই পড়ুয়া কম। যারা পরতেসে বেশির ভাগই আমার মত অপদার্থ !!!
যাই হোক যারা ক্রিয়েটিভ এবং গণিতকে ভালোবাসো তারা যেই ভার্সিটিতেই পড় না কেন,
তোমাদের কে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না। তোমাদের জন্য ভার্সিটি কোন ফ্যাক্টর ই না!!!
তোমার প্যাশন ই তোমাকে একদিন অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।
কিছু প্রশ্ন যেগুলোর মুখোমুখি প্রতিনিয়ত হতে হয়
কোন ভার্সিটিতে সিএসই পড়ব ?
সিএসই পড়ব, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলোর মধ্যে কোনটা ভালো হবে?
কম্পিউটার সায়েন্স পড়ার দুইটা উদ্দেশ্য থাকতে পারে,
১. কম্পিউটার বিজ্ঞানী হওয়া,
২. সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়া
যারা কম্পিউটার বিজ্ঞানী হতে চান তারা যেকোনো একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়লেই হয়,  Harvard University ও কিন্তু প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি। কিন্তু কথা
হলো আমাদের দেশের কোনো প্রাইভেট ভার্সিটিই বিদেশে খুব পরিচিত নয়।
যেখান থেকেই পড়, সিজিপিএ ভালো থাকলে এবং জিআরই-টোফেলে ভালো স্কোর থাকলে
তোমার সুযোগ থাকবে।
এবার আসি যারা সফটওয়্যার তৈরির কাজ করতে চাও। ভালো সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের দেশ এবং বিদেশে  চাকরির সুযোগ অনেক আর বেতনও ভালো। গুগল, মাইক্রোসফট, ওরাকল ইত্যাদি ইত্যাদি। এইগুলার নাম শুনলেই মাথ নষ্ট ম্যান :p
বাংলাদেশে অনেক প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি আছে, মনে করো সেগুলোর একটা ranking করা
হলো। এখন সমান মেধার দুই বন্ধুর
একজন Ranking এ ১ম দিকে থাকা ভার্সিটিতে পড়ল,আরেকজন পড়ল শেষের দিকের ভার্সিটিতে। শেষের দিকেরটায় যে
পড়বে, সে যদি ঠিকমতো প্রোগ্রামিং শেখে, চর্চা করে, সফটওয়্যার তৈরির কলাকৌশল সম্পর্কে খোঁজখবর রাখে, আর ১ম দিকে থাকা ভার্সিটিতে পড়ুয়া বন্ধু যদি কেবল গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরে
বেড়ায়, তাহলে ক্যারিয়ারের শুরুতে প্রথম জন, যে শেষের দিকে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে, সে অনেক সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে। কারণ সফটওয়্যার প্রকৌশলবিদ্যায় ভালো করতে হলে কাজ জানা
প্রয়োজন এবং পরিশ্রমীরাই এখানে
ভালো করে।
একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে খোঁজ নিতে গেলে প্রথমেই জানতে হবে, শিক্ষকরা কেমন। কথা
হচ্ছে, কম্পিউটার সায়েন্স কিন্তু অন্য বিষয়ের মতো নয়, যে অমুক ভার্সিটিতে ভালো পড়ায়, তাই
সেখানের শিক্ষার্থীরা ভালো। বেশিরভাগই নিজে নিজে শিখতে হয়, শিক্ষক কেবল
অনুপ্রেরণা দেন। এখানে একজন তরুণ শিক্ষকও অনেক অনুপ্রেরণা দিতে পারেন, আবার পিএচইডি করা শিক্ষকও শিক্ষার্থীদের কাছে বিষয়বস্তু বোরিং করে তুলতে  পারেন। তাই ডিগ্রীর দিকে না
তাকিয়ে খোঁজ নিতে হবে, কোন
ভার্সিটিতে এমন শিক্ষক বেশি যারা মনমানসিকতায় তরুন, শিক্ষার্থীদের সাথে বন্ধুর মতো ব্যবহার করেন
তবে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা তে যেসব ইউনিভার্সিটি এগিয়ে থাকে সেসব ইউনিভার্সিটি তে ভর্তি হওয়াই শ্রেয়। কারণ প্রোগ্রামিং টা হলো হার্ট এর মত। প্রোগ্রামিং এ ভালো না হলে সে কোনদিনই একজন ভালো সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার আশা করতে পারে না।যদি করে তাহলে তিনি বলদ /বোকা/গাধার রাজ্যে বাস করছেন
আর ভর্তি হওয়ার পরে ক্লাস শুরুর আগ
পর্যন্ত যে সময়টা পাওয়া যায়,
সেসময়ে একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শিখে ফেললে
সবচেয়ে ভালো হয়। তাহলে ক্লাস শুরু হলে কোনো চাপ পরে না, নইলে প্রোগ্রামিং নিয়ে হিমশিম খেতে হয়। আর এই বিষয়গুলো শিক্ষক ক্লাসে পড়ান আর নাই পড়ান, নিজে নিজে পড়ে বা বন্ধুদের সাহায্য নিয়ে আয়ত্বে আনতে হবে। এগুলো না শিখলে রেজাল্ট ভালো হলেও বিপদে
পড়বে।
স্ট্রাকচার্ড প্রোগ্রামিং,
অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড
প্রোগ্রামিং,
ডিসক্রিট
ম্যাথমেটিকস,
ডাটা স্ট্রাকচার,
অ্যালগরিদম, ডাটাবেজ, কম্পিউটার
নেটওয়ার্কিং, আর্টিফিশিয়াল
ইন্টিলিজেন্স, ওয়েব
প্রোগ্রামিং, সফটওয়্যার
ইঞ্জিনিয়ারিং, সফটওয়্যার
অ্যানালাইসিস ও ডিজাইন।
মোটামুটি সব ভার্সিটিতেই
এগুলো পড়ায়। এসব বিষয়ে বস
হয়ে যেতে হবে।
ক্লাস শুরুর আগে তামিম শাহরিয়ার সুবিন ভাইয়ের
কম্পিউটার প্রোগ্রামিং বাংলা বইটা পড়তে পারো।
এই বইটার ভিডিও টিউটোরিয়াল সহ এখন
ফ্রী Android App পাওয়া যাচ্ছে গুগল প্লেতে।
(সংকলিত এবং পরিমার্জিত)
যাই হোক মাঝরাতে ভালো লাগছিলো না ভাবলাম তোমাদের জন্য কিছু লিখি। মাঝরাতে বিরক্ত করার
জন্য আমি দু:খিত।
সবার জন্য শুভ কামনা রইলো
Md Shawon Sikder
Department of Computer Science & Engineering
University of Dhaka

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন