CCNA কি?
Cisco Certified Network Associate
যাকে সংক্ষেপে বলা হয় CCNA।
এটি একটি বিশেষ ধরনের
নেটওয়াকিং কোর্স। চাকরির
প্রমোশনে ও জব
এনরিচমেন্টে আইটি সার্টিফিকেশনের
বিকল্প নেই।
যারা নেটওয়াকিং সম্পর্কে জানতে আগ্রহী,
নেটওয়ার্কিং পেশা হিসেবে নিতে চান
তাদের জন্য নেটওয়াকিং শিক্ষার
শুরু হতে পারে CCNA কোর্সটি দিয়ে।
নেটওয়াকিং বিষয়ক যতধরনের কোর্স
বর্তমানে প্রচলিত রয়েছে তার
মধ্যে Cisco Certified Networking
কোর্সগুলো হচ্ছে পূর্বের সকলের
চেয়ে ভাল। এর কোর্স কারিকুলাম
অত্যন্ত আধুনিক ও সময়োপযোগী।
সিসিএনএ টেকনো বিশেষজ্ঞদের
নেটওয়ার্ক স্কিল উন্নয়নে সর্বাধিক
সহায়তা সহ সর্বশেষ প্রযুক্তির
নেটওয়ার্ক জ্ঞান প্রদান করবে। Cisco
Career Certifications এর আওতায়
নেটওয়ার্ক সংক্রান্ত কোর্সগুলোর
মধ্যে এন্ট্রি লেভেলের কোর্স CCENT
(Cisco Certified Entry Networking
Technician) তারপরই CCNA। CCNA করার
জন্য CCENT করতেই হবে এমন কোন
বাধ্যবাধকতা নেই, তবে CCNP (Cisco
Certified Network Professional) এবং CCIE
করতে গেলে আপনাকে অবশ্যই CCNA
কমপ্লিট থাকতে হবে। এই কোর্সের
টাইটেল স্পন্সর হচ্ছে আমেরিকার
Cisco Systems, Inc. এটি বিখ্যাত
নেটওয়াকিং ডিভাইস
প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। Cisco এই
কোর্স চালু করেছে তাদের
প্রোডাক্টের পাবলিসিটি এবং দক্ষ
জনবল তৈরী করার জন্য।
বর্তমানে দুই ধরনের CCNA কোর্স চালু
আছে। দুটি কোর্সের ভিউ দুই ধরনের।
সেগুলো হচ্ছে :
# CCNA Discovery
# CCNA Exploration
CCNA Discovery :
Discovery মূলত তাদের জন্য যাদের
কম্পিউটার সম্পর্কে প্রাথমিক জ্ঞান
আছে কিন্তু
নেটওয়াকিং সম্পর্কে বিশেষ কিছু
জানা নেই। এটি Exploration এর
চাইতে সহজ এবং খুব
বেশী গভীরে না গিয়েও বেসিক
নেটওয়াকিং সম্পর্কে পরিস্কার
ধারনা দিতে পারে। Beginner দের
জন্য এটি সবচাইতে ভাল
নেটওয়ার্কিং কোর্স। CCNA Discovery
এর এক বছর মেয়াদী মোট
৪টি সেমিস্টার রয়েছে।
এগুলো হচ্ছে -
১। Networking for Home and Small
Businesses v4.0
২। Working at a Small-to-Medium Business
or ISP v4.1
৩। Introducing Routing and Switching in the
Enterprise v4.0
৪। Designing and Supporting Computer
Networks v4.0
CCNA Exploration :
CCNA Exploration একটু এ্যাডভান্স
ইউজারদের জন্য। এই কোর্সে ভাল
করার জন্য আপনাকে কম্পিউটার
এবং নেটওয়াকিং সম্পর্কে বেশ ভাল
জ্ঞান থাকতে হবে। সাধারনত
কম্পিউটার
ইঞ্জিনিয়ারিং বা কম্পিউটার
বিষয়ক অন্য কোন গ্রাজুয়েশন
ডিগ্রীধারীরা এই কোর্স
নিয়ে থাকে। তবে অন্যান্যদের
হতাশ হবার কিছু নেই,
চেষ্টা থাকলে অন্যদের পক্ষেও ভাল
করা সম্ভব। CCNA Exploration এরও এক বছর
মেয়াদী মোট ৪টি সেমিস্টার।
এগুলো হচ্ছে -
১। Network Fundamental
২। Routing Protocol and Concept
৩। LAN Switching and Wireless
৪। Accessing the WLAN
CCNA কেন পড়ব?
এরকম প্রশ্ন মনে আশা স্বাভাবিক।
এক্ষেত্রে উত্তরটাও মন থেকেই বের
করতে হবে। ভাবতে হবে আপনার
চাহিদাটা কি। আপনি কি আপনার
ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার
নেটওয়ার্কিং নিয়ে সাজাতে চান?
আপনার জব অপরচুনিটি বাড়ানোর জন্য
কি নেটওয়াকিং জানা প্রয়োজন?
আপনার কি আগ্রহ
আছে নেটওয়াকিং এর প্রতি?
তবে মনে রাখতে হবে যে CCNA কোন
গ্রাজুয়েশন লেভেলের কোর্স
বা তার সমপর্যায়ের নয়। তবে CCNA
Certified দের চাকুরী বাজার আছে।
অনেকে মনে করেন এইসব কোর্স
কম্পিউটার সায়েন্সে গ্রাজুয়েটদের
জন্য। আসলে কম্পিউটার
সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েশন না করেও
কিন্তু নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার
হওয়া সম্ভব। আমাদের
দেশে আইএসপিগুলোতে নেটওয়ার্ক
সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার
এমনকি অনেক ব্যাংকে পর্যন্ত
নেটওয়ার্ক সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার
রয়েছেন যারা কম্পিউটার সায়েন্স
কখনো পড়েননি। কিন্তু বিভিন্ন
আইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,
থেকে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক
বিষয়ে ১ বছর
মেয়াদি ডিপ্লোমা সম্পন্ন করে জব
মার্কেটে ঢুকে পড়েছে। ১৯৯৩-১৯৯৭
সাল পর্যন্ত যারা এসব
ডিপ্লোমাগুলো করে জব
মার্কেটে ঢুকেছিলেন এমন অনেকেই
আজকে অনেক বড় প্রতিষ্ঠানের
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক
ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের কর্ণধার।
অথচ ওনাদের কোন কম্পিউটার
সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েশন নেই,
এমনকি সাধারণ ডিগ্রী পাস
অনেকেও নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার
হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছেন।
তবে বর্তমানে যেসব প্রতিষ্ঠান
ডিপ্লোমা করাচ্ছে তাদের মান
কিছুটা কমে গেছে বললে খারাপ
কিছু বলা হবে না।
অন্যদিকে প্রতিযোগিতা এ
পেশার ক্ষেত্রে অনেক
বেড়ে গেছে এবং কম্পিউটার
সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েট করেও
অনেকে নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমাগুলো আবার
করে নিচ্ছে। যদি আপনি কম্পিউটার
সায়েন্সে না পড়ে থাকেন
তবে নেটওয়ার্ক ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার
স্বপ্ন
থেকে থাকে তাহলে আপনাকে স্বাগতম;
কারণ এ পেশায় কম্পিউটার
সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েট নয় এমন
ক্যারিয়ারিস্টের সংখ্যা অনেক।
তবে এক্ষেত্রে আপনাকে দু’তিনটি ইন্টারন্যাশনাল
ভেন্ডর সার্টিফিকেট কম্পিউটার
নেটওয়ার্কিং এর উপর অর্জন
করতে হবে। একই কথা কম্পিউটার
সায়েন্সের বেলায়ও প্রযোজ্য।
কিভাবে শুরু করব?
কম্পিউটার নেটওয়ার্ক
ইঞ্জিনিয়ারিং এ পেশা গড়ার
ইচ্ছা থাকলে অবশ্যই আপনার ধৈর্য
থাকতে হবে অত্যন্ত দুই বছর এ
বিষয়টি অধ্যয়ন করার। আমার মতামত
হলো প্রথমে আপনি যদি কম্পিউটার
সায়েন্সে না পড়ে থাকেন
তাহলে নীলক্ষেত
থেকে বাংলাভাষায় লিখিত
কম্পিউটার
নেটওয়ার্কিং বিষয়ে একটি বই
কিনে পড়া শুরু করুন।
পাশাপাশি ইংরেজি একটি নেটওয়ার্কিং বই
কিনে নেবেন। আর কম্পিউটার
সায়েন্সে গ্র্যাজুয়েশন করছেন
যারা তাদের বলছি,
ডেটা কমিউনিকেশন এবং কম্পিউটার
নেটওয়ার্কিং কোর্স দুটি ভাল মত
কমপ্লিট করবেন। যদি দেখেন কোর্স
দুটির বিষয় আপনাকে আকর্ষণ
করেছে এবং ভবিষ্যতে এ
বিষয়ে ক্যারিয়ার গড়ার
ইচ্ছা জন্মেছে তাহলে অন্তত
দুটি ইন্টারন্যাশনাল ভেন্ডর
সার্টিফিকেট অর্জন
আপনাকে করতেই হবে। যেমন:
প্রথমে CCNA তারপর CCNP।
CCNA কোর্স কোথায় করব ?
CCNA কোর্সটির পরীক্ষা দিতে হয়
অনলাইনে এবং কোর্স ম্যাটেরিয়াল
সব প্রতিষ্ঠানেই একই।
সুতরাং আপনি CCNA যে কোন
সেন্টার থেকেই করতে পারেন। সব
সেন্টারের সার্টিফিকেট Cisco
থেকে আসবে এবং সবার
সার্টিফিকেট ভ্যালু সমান। শুধু
আপনাকে মনযোগী হতে হবে এবং আগ্রহ
ধরে রাখতে হবে।
তবে ল্যাবে রিসোর্স
বেশী থাকলে কিছু
বাড়তি সুবিধা পাবেন
হাতে কলমে শিখে নেওয়ার।
এছাড়া সিমুলেশন সফটওয়্যার Packet
Tracer যেটি Cisco থেকে দেওয়া হয়
এখানেও
আপনি নেটওয়াকিং প্রাকটিস
করতে পারবেন। সুতরাং আপনি খোজ
করুন সেন্টারটি অবস্থান এবং কোর্স
ফির উপর ভিত্তি করে। CCNA জন্য কোন
ফিক্সড ফিস নাই, যার
কারনে সেন্টার টু সেন্টার এর ফিস
ভিন্ন হতে পারে। আমাদের
দেশে সিসকোর লোকাল এডুকেশন
একাডেমিগুলো হলো- বাংলাদেশ
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়,
শাহজালাল বিজ্ঞান ও
প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,
আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়,
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল
ইউনিভার্সিটি, ব্র্যাক
ইউনিভার্সিটি,
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি।
উচ্চ মাধ্যমিক বা এইচএসসি সমাপ্ত
করে যে কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু
এক বছর মেয়াদি এ একাডেমিক
কোর্সে ভর্তি হতে পারবে।
সিসকো কোর্স ক্যারিকুলাম ও এ
বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তথ্য
পেতে যোগাযোগ করুন সিসকোর
অফিশিয়াল ওয়েব সাইটে http://
cisco.netacad.net আর একাডেমিক
কোর্স করার পর ভেন্ডর
পরীক্ষা সহজে দিয়ে দেওয়া যায়।
ক্যারিয়ার ক্ষেত্র
কম্পিউটার
নেটওয়ার্কিং ইঞ্জিনিয়ার
হিসেবে কাজ করার সুযোগ
রয়েছে আইএসপি অর্থাৎ ইন্টারনেট
সার্ভিস প্রোভাইডার
কোম্পানিগুলোতে।
এছাড়া মোবাইল কোম্পানি,
ব্যাংক, এয়ারলাইন, ট্রাভেল
এজেন্সি, শেয়ার মার্কেট,
মাল্টিন্যাশনাল ও ন্যাশনাল
কোম্পানি,
বায়িং হাউজে অর্থাৎ
যেখানে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক আর
ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয় সেখানেই
রয়েছে চাকরির সুযোগ।
দিনে দিনে এই চাকরির
বাজারটি বড় হচ্ছে।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন